খুলনা মহানগরীর ২১ নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা মানিক হাওলাদার হত্যা মামলার দু’ ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৬। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের বাগেরহাট জেলার একটি বাসস্টান্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ২২ জানুয়ারী হত্যাকান্ডের বিষয়ে ২১ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি মো: আবু সাইদ বাদী হয়ে ৮ জন আসামির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তার হওয়া দু’জন আসামি হলেন, রেলওয়ে লোকো কলোনী এলাকার জনৈক শাহাজাহান হাওলাদারের দু’ছেলে মেহেদী ও সম্রাট হাওলাদার। এর আগে স্থানীয়রা এ মামলার অপর দু’ আসমি সাজ্জাদ হাওলাদার ও তুলিকে স্থানীয়রা গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারে ২১ নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা মানিক হত্যা মামলার দু’ আসামি মেহেদী ও সম্রাট হওলাদার বাগেরহাটে অবস্থান করছে। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা বাসযোগে নড়াইলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তাদের গ্রেপ্তার করে বাগেরহাট থেকে র্যাব কার্যালয়ে আনা হয়। হত্যাকন্ডের ব্যাপারে তারা সবকিছু র্যাবের কাছে স্বীকার করেছে।
এদিকে যুবদল নেতা মানিক হত্যাকন্ডের ব্যাপারে ২১ নং ওয়ার্ড বিএনপি বিএনপি সভাপতি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র নেতাদের অবগত করেন এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা এলাকায় মাদক বিকিকিনিসহ বিভিন্ন প্রকার অসামাজিক কর্মকান্ডের এবং অপরাধমূলক কর্মকান্ডের জন্য জনৈক মিলন হাওলাদার আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এ মামলায় যুবদল নেতা মানিক আসামিদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী এবং রাজনৈতিক ভিন্ন মতাদর্শের কারণে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
হুমকির বিষয়টি ২১ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি অবগত হয়ে মানিককে থানায় সাধারণ ডায়েরী করার পরামর্শ দেন। তাছাড়া আসামিরা পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের সমর্থক হওয়ায় এলাকায় দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর আওয়ামী গডফদারের সহায়তায় এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। ওই সকল অপরাধের বিরোধীতা করায় যুবদল নেতা মানিককে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০ জানুয়ারী সকাল ১১ টার দিকে পুরাতন রেল কলোনী রেল মসজিদের পেছনে শাহীনের ভাড়াবাড়ি সংলগ্ন রাস্তায় মানিক স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে বের হওয়ার সাথে সাথে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে ঘিরে ফেলে। মানিক নিজের আত্মরক্ষার্থে রাজনৈতিক সহকর্মী রুবেলকে ফোন দেয়।
এর আগে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মেহেদী হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে মানিকের বুকে ও সম্রাটের চাকু দিয়ে পেটে আঘাত করে। উপস্থিত অন্যান্য আসামিরা তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্রদিয়ে স্থানীয়দের আক্রমনের জন্য ধাওয়া দেয়। স্থানীয়দের ডাক চিৎকারে অন্যান্যরা এগিয়ে এলে মেহেদীসহ অন্যান্য আসামিরা পালিয়ে গেলেও সাজ্জাদ ও তার বোন তুলি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে পারেনি। পরবর্তীতে মানিককে আহত অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
খুলনা গেজেট/এমএম